মেঘের দেশের রাজকন্যা, আহমাদ স্বাধীনের রূপকথার রঙিন জগৎ
চন্দ্রশিলা ছন্দা | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ১২:৩৮ পিএম, ২৫ জুন ২০২১ শুক্রবার
মেঘের দেশের রাজকন্যা, আহমাদ স্বাধীন
আমি একটি ভালো বই পড়বো এবং তা চুপচাপ এড়িয়ে যাবো, এটা কেন যেন মোটেও পারি না। আমি শিশুসাহিত্যিক আহমাদ স্বাধীনের "মেঘের দেশের রাজকন্যা" গল্পের বইটি পড়ে অভিভূত হয়েছি।
মেঘের দেশের রাজকন্যা বইটিতে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের মাত্র তিনটি গল্প স্থান পেয়েছে। তিনটি গল্পকেই আমরা খাঁটি রূপকথার গল্প বলতে পারি। গল্পগুলোতে আছে রাজা-রানি, রাজহংস, দৈত্য, মানুষ খেকো গাছের কথা।
এতোটা জাদুময় উপস্থাপন যে আমি অভিভূত না হয়ে পারিনি। শিশুদের গল্পের বইয়ের পাঠপ্রতিক্রিয়া নিয়ে পড়তে গিয়ে আমি দেখেছি কোন কোন লেখকের বর্ণনা হয়েছে ভয়াবহ। যা শিশু তো শিশু, আমিই ভয়ে শিহরিত হয়েছি। যেমন, "অনিক সাপটিকে একটা লাঠি দিয়ে মারতে থাকলো। মারতে মারতে সাপটির মাথা থেতলে গেলো। গলগল করে রক্ত ঝরতে শুরু করলো। এবং ততক্ষণ পর্যন্ত মারতে থাকলো, যতক্ষণ সাপটি না মরলো।"
এই যে বর্ণনা এবং এগুলো পড়তে পড়তে চোখের সামনে যে দৃশ্য ভেসে ওঠে তা এককথায় ভয়াবহ। শিশুদের জন্য লিখতে গেলে এগুলোকে এড়িয়ে যেতেই হবে। নয়তো এই বর্ণনা থেকে শিশুরা হিংস্রতা ছাড়া ভালো কিছু শিখবে না। কিংবা এই বর্ণনাগুলো শিশুমনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। সেদিক থেকে গল্পকার আহমাদ স্বাধীন অসম্ভব সতর্কতার সাথে দৈত্যের মাছ, পশুপাখি এবংমানুষ ধরে খাওয়ার উপস্থাপনা এনেছেন খুবই স্বাভাবিক ভাবে, এবং খুবই মজাদার করে। যেমন টপাটপ, গপাগপ, এই সরল স্বাভাবিক উচ্চারণ পড়ে শিশুরা ভয়ভীতি দূরে থাক, ভীষণ মজা পাবে বলেই আমার ধারণা। আরও মজার বিষয় হলো যে, দৈত্যের পেটে গিয়ে কেউ মারা যাচ্ছে না। বরং মাছেরা ভেসে বেড়াচ্ছে, শিশুদের পড়া লেখা নেই, মজা করে খেলছে। কিন্তু দৈত্যের পেট তো আর গ্রামের সমান নয়, পরিসর ছোট হওয়ায় একটা সময় মানুষগুলোর একঘেয়েমি অনুভব হয়। এবং সেখান থেকে বের হয়ে আসার প্রয়োজন বোধ করে।
সুতরাং দৈত্যের পেটে গিয়েও স্বচ্ছন্দতার চমৎকার প্রকাশ দেখতে পাই চার চোখা দৈত্যের গল্পে। শিশুসাহিত্য ঠিক এমনটাই হওয়া উচিত।
আমরা আমাদের লেখার মধ্যে আজকাল শিক্ষনীয় কিছু রাখতে চাই। যেন গল্পের ছলে পাঠ করে শিশুরা কিছু শিখতে পারে। কিন্তু কোন কোন শিশুসাহিত্যিক সেই শিক্ষাটাও এমন করে দেন, যেন মিষ্টির ভেতরে ট্যাবলেট গুঁজে দেয়ার মত হয়ে যায়। সেই জায়গা থেকেও আহমাদ স্বাধীনকে একজন সার্থক এবং সফল লেখক মনে করি আমি। কারণ তিনি মানুষ খেকো জাদুর গাছ গল্পটিতে -সেই গাছটিকে এতো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন! এবং গাছটি যে বাচ্চাগুলোকে খেয়ে মানুষদের একটা শিক্ষা দিতে চেয়েছে সেই বিষয়টি খুবই স্বাপ্নিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। জাদুর গাছটির গহব্বরে পৌঁছে ইনির সাথে দেখা হয়েছে গাছদের রাজার সাথে।
সেই রাজ্যের বর্ণনাও এসেছে খুব পরিচ্ছন্ন সুন্দরভাবে। তাই শিশুদের গাছ না কেটে গাছ লাগানোর শিক্ষাটি গল্পকার এতোটাই সাবলীল এবং প্রাসঙ্গিকভাবে নিয়ে এসেছেন যে মনেই হয়নি তিনি গাছ না কাটার জন্য কোন আদেশ-উপদেশ দিচ্ছেন। বরং রূপকথার গল্পের মতই স্বাপ্নিক হয়ে উঠেছে প্রতিটি গল্প।
আবার চারচোখা সেই অন্ধ ভয়ঙ্কর দৈত্যের গল্পটিতে আমরা দেখতে পাই, বৈদ্যি কাছিম দৈত্যকে সুস্থ করার পর দৈত্য স্বভাবমত কাছিমকে খেয়ে ফেলে, এবং সবশেষে গল্টুর বুদ্ধিতে সবাই আবার মুক্ত হয়। সাথে বদ্যি কাছিমও মুক্ত হয়। আর বদ্যি কাছিম মুক্ত হয়ে দৈত্যকে আবার যে অন্ধ করে দেয়, সেখানেও লেখক কোন ভীতিকর বর্ননা না নিয়ে এসে চমৎকারভাবে এড়িয়ে গিয়ে বলেছেন, "বৈদ্যি কাছিম তার চার চোখ আবার আগের মত করে দিলো।" তারমানে দৈত্যটা আবার আগের মত অন্ধ হয়ে গেলো... এটা বুঝতে কারো কোন সমস্যাই হয় না। আর পেট ফেটে যাওয়ার জন্য দৈত্যটা দিন দিন দুর্বল হতে শুরু করলে শিশুরা তার সাথেও খেলতে শুরু করলো। এই যে বাঁক! এবং শিশুসুলভ আচরণের প্রকাশ, তা একথায় অসাধারণ!
শিশুদের জন্য লেখার সার্থকতা কিংবা মুন্সিয়ানা এখানেই। সেই অর্থে বরং শিরোনামের গল্পটিকে আমার একটু মিঠেকড়া মনে হয়েছে। যদিও তা খুবই সামান্য। তাই তিনটি গল্প বিচারে আমরা তাকে একজন সার্থক শিশু গল্পকার বলতে পারি।
মেঘের দেশের রাজকন্যা বইটি ২০২১ এর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় দেশজ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত। অদ্ভুত সুন্দর প্রচ্ছদ এবং অঙ্গ সজ্জায় আছেন ফরিদী নুমান। চমৎকার চার রঙা প্রচ্ছদে মন ভালো করা রূপকথার এই বইটি পাঠক মহলে পৌঁছে যাক। নির্মল আনন্দলাভ হোক শিশু-কিশোরদের মনে।
- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত
- বিশৃঙ্খলায় ডুবছে গ্রোকিপিডিয়া
- লিভার ভালো রাখতে যে ৩ খাবার খাবেন
- আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল
- খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান
- ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’
- বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে
- বন্যায় সহায়তা
বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী - পুতিনকে জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানালেন মোদি
- মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু
- নাসরিনের অধিনায়ক সানজিদা, সাবিনা-মাসুরারা অন্য ক্যাম্পে
- বিয়ে নিয়ে প্রথম মুখ খুললেন রাশমিকা
- হেলিকপ্টারে বিমানবন্দর যাবেন খালেদা
- আজ মধ্যরাতে লন্ডনে নেওয়া হবে খালেদা জিয়াকে
- খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে সম্মতি কাতারের
- পুতিনকে জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানালেন মোদি
- নাসরিনের অধিনায়ক সানজিদা, সাবিনা-মাসুরারা অন্য ক্যাম্পে
- খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা
- বিয়ে নিয়ে প্রথম মুখ খুললেন রাশমিকা
- হেলিকপ্টারে বিমানবন্দর যাবেন খালেদা
- খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায়
- আজ মধ্যরাতে লন্ডনে নেওয়া হবে খালেদা জিয়াকে
- ‘পরিবেশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার’
- আগামী নির্বাচন নিয়ে জাতি গর্ব করবে : প্রধান উপদেষ্টা
- খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে সম্মতি কাতারের
- তলবের ১০ মিনিটেই হাজির জেডআই খান পান্না, চাইলেন নিঃশর্ত ক্ষমা
- মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু
- বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে
- লিভার ভালো রাখতে যে ৩ খাবার খাবেন
- বিশৃঙ্খলায় ডুবছে গ্রোকিপিডিয়া

